সাংবাদিকতার দৌড়ঝাপে উৎকণ্ঠায় সচেতন মহল।
নামের আগে বা পিছনে লাইভ নিউজ অথবা খবর ২৪ বা মনু নিউজ লিখে খোলা হয়েছে একটি পর একটি ফেসবুক পেজ? আপলোড দেওয়া হচ্ছে একের পর এক ভিডিও, একটু ঘেঁটে দেখলে দেখা যাবে মূল বিষয় হচ্ছে পরকীয়া, মামার বাড়ি মামী, ধানক্ষেতে কাক, স্যারের বাসায় বউ বোন ভিটায় শালী। মূল বিষয় ভাইরাল হওয়া।
পেইজে এডমিন নিজেকে পরিচয় দিচ্ছে সাংবাদিক। বলছে ওটা -ওটা নিউজ আমার। দেখান সাধারণ মানুষেদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি। পান থেকে চুন খসলেই হাজির সাংবাদিকরা। কেউ করেন ভিডিও কেউ দিচ্ছে লাইভ।পরবর্তীতে এসব ভিডিও দেখিয়ে করছে জনসাধারণকে জিম্মি, হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। রেহাই পাচ্ছে না ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গরা। মফস্বল শহর এরা হার মানাচ্ছে সিনেমার গল্প কেউ। চায়ের দোকানদার থেকে শুরু করে পত্রিকার হকার রাতারাতি হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন পোর্টাল বা ফেসবুক, চ্যানেলের মালিক। কিংবা জেলা উপজেলার বিশেষ প্রতিনিধি। এরকম বিভিন্ন নামে বেনামে এবং বিভিন্ন মনগড়া পোটর্লের পরিচয় দিয়ে নিজেকে সাংবাদিক দাবি করছে।
এদের সংখ্যা হিসাব করলে শতাধিক ছাড়িয়ে যাবে। আরেকটু ঘেঁটে দেখলে দেখা যায় এদের অনেকেই পেরোয়নি উচ্চ মাধ্যমিক বা মাধ্যমিকের গণ্ডি টুকু। তবে এরা সবাই নিজেকে দাবি করছন প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যম কর্মী। এদের নিয়ে সাধারণ মানুষ বলছেন, সবার হাতেই তো দেখি মাইক্রোফোন কি আসল এ নকল বোঝাই মুশকিল। এদের দেখি কোন ঘটনা ঘটলে সবার আগে উপস্থিত। পারিবারিক কোনো ঘটনা ঘটলেও পরিবারের সকল সদস্যরা জানার আগে কিছুসংখ্যক ব্যক্তি হাজির হয় সাংবাদিক পরিচয়। এরা কিভাবে বা কাদের মাধ্যমে খবর পায় বুঝতে পারিনা। তারা এসে তাদের ফোনে বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক কথা ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে এইসব ভিডিও দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে তারা টাকা দাবি করে। বলে টাকা না দিলে এই ভিডিও ছেড়ে দেব,নিউজ করে দেব। সম্মানের ভয় তো সকলেরই আছে তাই তাদের কাছে জিম্মি হয়ে গুনতে হয় তাদের নির্ধারিত অর্থ। এই অপসংবাদিকতার কবলে জিম্মি হচ্ছে সাধারন মানুষ, তেমনি উৎকণ্ঠায় সচেতন মহল।
যারা মূল ধারার সাংবাদিকতা করছেন। ওই সকল তথাকথিত সাংবাদিকদের নিয়ে বিব্রত হচ্ছেন। সত্যিই বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় কাজ করছি তারা আজকে একপ্রকার কোন ঠাসা হয়ে আছে। ওই সকল তথাকথিত সাংবাদিকরা সাধারণ ঘটনাকে তিল থেকে তাল বানাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের পোর্টাল ও ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলের মালিক তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে কোন ঘটনার সত্যতা যাচাই-বাছাই না করেই, তাদের মত করে করছে ভাইরাল।
আবার শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নাটক সাজাচ্ছে। এই কৌশল কে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। আবার মাঝে মধ্যে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে অর্থ গ্রহণ করে। তাদের থেকে খেতে কাজ করা কৃষক থেকে শুরু করে সরকারি বা ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ রেহাই পাচ্ছে না। আরেকটি বিষয় সব সময় এই সকল সাংবাদিকদের দেখা না মিললেও নির্বাচনকালীন সময়ে তারা চাঙ্গা হয়ে ওঠে। বর্তমানে এদের কারণে সাংবাদিকতা করা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গরা বলছেন, যারা সাংবাদিকতাকে বিভিন্নভাবে কলঙ্কিত করছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো হবে পৃথিবীতে বেড়াতে। একজন সাংবাদিকের কাজ হল সাধারণ মানুষের কথা দেশ ও জাতির কাছে তুলে ধরা। তবে তারা এটা না করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছেন, এদের রুখতে হবে দেশ ও জাতির স্বার্থে। সাধারণ মানুষদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা খুবই প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে