গোপালগঞ্জের ৫নং পৌর ওয়ার্ডবাসীর দুর্ভোগ চরমে: কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা

গোপালগঞ্জের ৫নং পৌর ওয়ার্ডবাসীর দুর্ভোগ চরমে: কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা
যুগকথা রিপোর্ট :
গোপালগঞ্জ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডবাসী দীর্ঘ ছয় বছর ধরে চলাচলের রাস্তার অভাবে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। ৫ বছর আগে রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হলেও কয়েক মাসের মধ্যে সে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে এই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। কতৃপক্ষ নানান ধরনের আশ্বাস দিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
গোপালগঞ্জ সদর পৌরসভার সাবেক ৩ নং ওয়ার্ড বর্তমানে ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের যাতায়াতের প্রধান রাস্তার বেহাল দশা অবস্থায় থাকার কারনে ২০১৮ সালে এর সংস্কারের কাজ হাতে নেন তৎকালীন পৌর মেয়র ও কাউন্সিলর। কিন্তু ২০১৯ সালে এসে শুধুমাত্র ড্রেনের কাজ শেষ করে ফান্ড নেই দেখিয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ রাখে কতৃপক্ষ। এতেই বাধে বিপত্তি রাস্তা থেকে ড্রেনের উচ্চতা ৩ ফুটের বেশী হওয়ায় সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায় প্রায় ১২টি শাখা রোডের। ফলে ভোগান্তি বাড়তে শুরু করে এলাকাবাসীর। রিক্সা, ভ্যান সড়কের ভিতরে প্রবেশ না করতে পারায় জীবনযাত্রার মান সংকুচিত হয়ে পরেছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, গ্যাস সিলিন্ডার, চালের বস্তা, বাজারের ব্যাগ, গৃহস্থলী পন্য সহ ভারী সকলপন্য ঘাড়ে করে বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। রাস্তা না থাকার দরুন বন্ধ হয়ে গেছে জরুরী সব ধরনের সেবা। বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় মূমুর্ষ/গর্ভবতী/বৃদ্ধদের কোলে করেই পারাপার করতে হয়।ফলে হাসপাতালে নিতে নিতে অনেক অঘটন ঘটে যায়। বর্ষার মৌসুমে রাস্তার দুই পাশে পানিজমে থাকায় স্কুলগামী কোমলমতী শিশুদের পরতে হয় বিড়ম্বনায়। স্কুল ভ্যান ভিতরে প্রবেশ না করায় নোংরা পথ পার হয়ে মেইন রোডে অপেক্ষা করতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ফলে ঘটে নানান অনাকাংক্ষিত ঘটনা।অনেকেই পরে গিয়ে আহত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী ভিতরে প্রবেশ না করতে পারায় চরম আতংকে দিন অবহিত করছে এই ওয়ার্ডের অধীকাংশ বাসিন্দা। পৌরসভার ময়লা নি:স্কাসনের গাড়ী ভিতরে প্রবেশ করতে নাপাড়ায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলায় এলাকায় প্রচুর দূগর্ন্ধ ও মরনঘাতী মশা ডেঙ্গুর সংখ্যা বাড়ছে। মাসে দুই থেকে তিনবার পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীগন বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও ফ্ল্যাটের ময়লা বালতিতে করে নিষ্কাশন করে। যা প্রয়োজনের তুলনায় একদমই নগণ্য।
রাস্তা না থাকায় এই এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে নেই ভাড়াটিয়া, আবার যারা আছেন তারা অন্যত্র যেতে পারছেন না মালামাল নেবার আতঙ্কে। 
নিয়মিত পৌরকর সহ অন্যান্য সেবার অর্থ নিয়মিত পরিশোধ করেও পৌর এলাকার সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায়  ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এখন তারা আর আশ্বাস নয় কাজ দেখতে চায়। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষ নিকট বারবার জানালেও এখন পর্যন্ত তার সমাধান হয়নি। 
এব্যাপারে পৌরসভার বর্তমান ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার এই ওয়ার্ডের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত আছে। আগের কাউন্সিলর এর মেয়াদে এই কাজ শেষ হবার কথা ছিল কিন্তু আমার বোধগম্য হচ্ছে না কেন কাজটি শেষ হয়নি। বর্তমানে আমি নিজস্ব অর্থায়নে দু একটি রাস্তা নির্মাণ সহ বিভিন্ন জায়গায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছি। উক্ত রাস্তার কয়েকটি টেন্ডার ইতিমধ্যে হয়েছে এবং বাকিগুলো জমা দেয়া হয়েছে খুব দ্রুত ই টেন্ডারের মাধ্যমে সকল রাস্তার সমস্যা সমাধান করা হবে।
বর্তমান ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক মেয়র রোমান মোল্লা জানান, নির্বাচন সংক্রান্ত কারণে এবং ফান্ড না থাকার কারণে তৎকালীন সময়ে এই রাস্তার কাজ সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তবে এতদিনে যে রাস্তার কাজ শেষ হয়নি সেটা আমার জানা ছিল না। এটা অনেক আগেই শেষ হবার কথা ছিল।
গোপালগঞ্জ পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, ইতিমধ্যে কুয়েত ফান্ডের মধ্য দিয়ে একটি রাস্তার টেন্ডার হয়েছে আশাকরি অচিরেই কাজ শুরু হবে। বাকী রাস্তাগুলির কাজ প্রসেসিং এ আছে এগুলি আমরা পিডি অীফসে পাঠিয়েছি। এগুলি অনুমদোন হবার পরে টেন্ডারের মধ্য দিয়ে বাকী কাজ সম্পন্ন হবে।
সঠিক টেন্ডারের মধ্য দিয়ে দ্রুত রাস্তার কাজ শেষ হলে এলাকাবাসীর এত বছরের চরম দূর্ভোগ কমবে। শুধু আশ্বাস নয় বাস্তবায়ন দেখতে চায় অবহেলীত পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিনাগন।