যুগকথা রিপোর্ট:
গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয় যেন দুর্নীতির চরম শিখরে গিয়ে পৌঁছেছে। এখানে নিয়ম-নীতি বলতে যেন পুরোটাই বিপরীত।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অফিসে অফিস কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচী অফিসে নেই। শুধুমাত্র অফিস সহকারি সিদ্দিকুর রহমান বাদে একজন কর্মচারীকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নির্দিষ্ট কিছু দুর্নীতির তথ্য জানতে অফিস সহকারী সিদ্দিকুর রহমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সুকৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয়ের কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচীর উপরে সম্পূর্ণ ভার চাপিয়ে দেন। সরকারি বিভিন্ন ভাতা এবং দিবস উদযাপনের কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি ফোন দেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে। ফোনে থাকা অবস্থাতেই তিনি জানান সব কাগজ ম্যাডাম শ্রীময়ী বাগচীর আলমারিতে রাখা আছে। আমি কোন কাগজ দেখাতে পারবো না। পরবর্তীতে অন্য বিষয়ে কথা বলে তিনি পরিষ্কারভাবে সাংবাদিকদের বলেন যদি আপনাদের কোন তথ্যের দরকার হয় তাহলে তথ্য অধিকার আইনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করতে হবে। তাহলে আমি তথ্য দিতে পারবো এ ছাড়া আমি কোন ব্যাপারে কথা বলতে পারব না।
অভিযোগ রয়েছে কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাতৃত্বকালীন ভাতা যাদের পাওয়ার কথা তারা পায়নি। আত্মসাৎ করা হয়েছে সরকারি ভাতার টাকা। এ ব্যাপারে অফিস সহকারী সিদ্দিকুর রহমান বলেন এগুলো দেখার দায়িত্ব আমাদের না। এগুলো দেখবে চেয়ারম্যানরা। আমার কাছে শুধুমাত্র যারা ইউনিয়ন পর্যায়ে বিতরণ করবে তাদের নাম ও নাম্বার আছে। কারা কারা পেয়েছে বা কাদের কাদের পাওয়ার কথা সেটা আমার জানা নেই। কর্মকর্তা মাঝেমধ্যে অফিসে আসেন তিনি যখন অফিসে থাকে তখন তার সাথে কথা বলে দেখবেন। তার কথার বাইরে আমি কিছু করতে পারবো না।
কোটালীপাড়ার পিঞ্জুরি ইউনিয়নের এক গৃহবধূ নাম না প্রকাশ করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, আমার নামে ভাতার টাকা আদায় করা হয়েছে কিন্তু এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। পরে শুনেছি আমার নামে অন্য কেউ ভাতার টাকা তুলে নিয়েছে। আমি অফিস সহকারী সিদ্দিকুর রহমানকে বিষয়টি জানালে তিনি আমার কোন কথা শুনতে চাইনি। আমাকে অফিস থেকে বের করে দিয়ে বললেন তুমি চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে খোঁজ নাও এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না।
কোটালীপাড়া উপজেলা অফিসের অন্য এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, এই সিদ্দিকুর রহমান অফিসটিকে দুর্নীতির একটি আখড়া গড়ে তুলেছেন। মাঝেমধ্যে তিনি বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে সরকারি টাকা হাতিয়ে নেন। এ বিষয়ে দু একবার পত্রিকায় খবর ও প্রকাশ হয়েছে কিন্তু তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন।