বশেমুরবিপ্রবি’তে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উয্যাপন

বশেমুরবিপ্রবি’তে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উয্যাপন

যুগকথা রিপোর্টঃ

গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস-২০২৪ উয্যাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর ২০২৪) শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বিজয় র‌্যালি, আলোচনা সভা এবং দিনব্যাপী প্রীতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এদিন সকাল পৌনে ৯টায় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গোপালগঞ্জ শহরের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে।

 সকাল সোয়া ৯টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিজয় র‌্যালি করা হয়। র‌্যালিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালি শেষে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একাডেমিক ভবনের ৫০১ নং কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, প্রতিটি দিবসে আমরা আলোচনা করি, বক্তব্য দেই, শপথ নেই; যা ঘরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। সেটা বাস্তবায়নের জন্য সচরাচর আমরা আর কিছুই করি না। আমাকে খুব মর্মাহত করে যে, বিজয়ের দিনেই আমাদের স্বাধীনতা ছিনতাই হয়ে গেছে। কেননা পাক-হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মঞ্চে একজন বাঙালিও সম্মানের সাথে থাকার সুুযোগ পায়নি। পরবর্তীতে নানা ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে, ভৌগোলিক স্বাধীনতা পেলেও আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। বিধায় আমরা একটা দাস জাতিতে পরিণত হয়েছি এবং আমরা এভাবেই চলতে অভ্যস্ত। তারপরও আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন এই বিজয়। বিজয়কে ধারণ করে আমাদের যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর কথা, আমরা আজও সেখানে পৌঁছাতে পারিনি। কারণ সবসময় এদেশ পরিচালিত হয়েছে বিদেশি এজেন্টদের দ্বারা। এমনকি প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের কখনো সামনে আসতে দেয়া হয়নি। কাজেই আমাদের সুষ্ঠুভাবে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থেকে দায়িত্ব পালন করে এই দেশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।

এ সময় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসান বলেন, স্বাধীনতার জন্য আমাদের জীবন দেয়ার যে রীতি, সেটা বোধ হয় শেষই হচ্ছে না। আজকের এই স্বাধীনতার জন্য বহুবার বহু মানুষকে নানাভাবে জীবন দিতে হয়েছে। তারপরও ৫৩ বছর পর যখন হিসাব মেলাতে যাই, দেখি মাত্র ১০ ভাগের হাতে সমস্ত শক্তি, সম্পদ সবকিছু। বাকি ৯০ ভাগ মানুষ কিছুই পাচ্ছে না। এমনকি ২০ ভাগ মানুষ এখনো হতদরিদ্র। যারা মৌলিক অধিকারটুকুও পায় না। স্বাধীনতার প্যারামিটারে এমন করুণ পরিণতি হবার কথা ছিল না। আসলে আমাদের পরাধীনতার মূল কারণ বিশ্ব বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা সবসময় অযোগ্য, বিশ্বাসঘাতকদের পূজারী। যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণও করেনি, তাদের পূজা করি। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে আবারও আমাদের পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি হতে হবে। এই শৃঙ্খল ভাঙতে সবার আগে আমাদের যে স্বাধীনতা দরকার, তা হলো চেতনার স্বাধীনতা। বিলওয়াবস-এর সহকারী অধ্যাপক সোহানা সুলতানার সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান, রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান, প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীব, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়া, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক মো. বদরুল ইসলাম, পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি ড. মো. কামাল হোসেন, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. নাসিরুদ্দিন, অফিসার্স এসোসিয়েশনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ।