গোপালগঞ্জে সরকারি খাস জমি উদ্ধার
যুগকথা রিপোর্ট:
দূর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগের তিন দিন পর গোপালগঞ্জে পুলিশের এক অতিরিক্ত ডিআইজি’র পরিবার ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলে থাকা ১ একর ৭ শতাংশ সরকারি খাস জমি উদ্ধার এবং দখলমুক্ত করে তাঁর কাটার বেড়া দিয়ে ঘিরে সেখানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শনিবার সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোসা. নাজমুন নাহারের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি টীম অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার পাইককান্দি ইউনিয়নের বিজয়পাশা মৌজার পাইককান্দি পশ্চিমপাড়া ৫৬৯ দাগে ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত ওই জমির উপর অবৈধভাবে নির্মিত পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি রফিকুল ইসলাম শিমুলের পৈত্রিক বাড়ির সীমানা পিলার ভেঙ্গে দিয়ে জমি উদ্ধার ও দখল উচ্ছেদ করে। পরে উদ্ধারকৃত ওই জমি কাটা তারের বেড়া দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জে দুদকের গণশুনানি চলাকালে অতিরিক্ত ডিআইজি রফিকুল ইসলাম শিমুলের পরিবারের অবৈধ দখলে থাকা ১একর ৭ শতাংশ সরকারি খাস জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ করেন সদর উপজেলার মোচড়া গ্রামের আজম আলী খান। তার এ অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মোঃ জহুরুল হক বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন।
পাইকান্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আকতারুজ্জামান আকতু বলেন, অবৈধ দখলকৃত জমিটি এক সময় গোচারণ ভ’মি ছিল। এলাকার যুবকরা ফুটবল খেলতো। ২০-২৫ বছর আগে ওই জমিটি স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করে নেয়। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জমি উদ্ধার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। আবারও যাতে উদ্ধার হওয়া এ জমি অবৈধভাবে কেউ দখল করতে না পারে সে ব্যপারে প্রশসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
গোপালগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার সেসব এলাকায় সরকারি খাস জমি রয়েছে, সেসব খাস জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতি একটি চলমান নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা মেনে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে খাস জমি অবৈধ দখল মুক্ত ও উদ্ধার করতে অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে জেলা শহর ও অন্যান্য উপজেলাগুলোতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। সম্প্রতি, গোপালগঞ্জে দুদকের গণশুনানি চলাকালে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি রফিকুল ইসলামের পরিবারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সরকারি খাস জমি দখল এবং সেখানে প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ ওঠে।ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অত্যান্ত দ্রæততার সাথে আমরা জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখল উদ্ধার করে সেখানে কাটা তার দিয়ে ঘিরে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোসা. নাজমুন নাহার বলেন, খাস জমি উদ্দার ও সংরক্সণ আমাদের নিয়মিত একটি কাজ। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা কিছুদিন ধরে খাস জমি উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসছি। বেদখল হওয়া এসব জমি অনেক মূল্যবান।ইতোমধ্যে অনেক জমি আমরা উদ্ধার করকে সমর্থ হয়েছি। জেলার ৫টি উপজেলায় আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।আমরা এসব জমি কেবল উদ্ধার নয় - সংরক্ষণেরও উদ্যোগ নিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় পাইককান্দি ইউনিয়নের বিজয়পাশা মৌজার ১ একর ৭ শতাংশ খাস জমি অবৈধ দখল মুক্ত করা হয়েছে।
অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাম্মী কায়সারসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা অংশ নেয়