যুগকথা রিপোর্ট:
প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়ন (জিইউজে) এর বার্ষিক বনভোজন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত শনিবার প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জ এর সভাপতি আলিমুজ্জামান বিটু ও গোপালগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়ন এর সভাপতি সৈয়দ মুরাদুল ইসলামের নেতৃত্বে বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠিত হয়। বনভোজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জের সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমেদ দাড়িঁয়া।
এদিন সকাল ৮ টায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জ চত্বরে আসতে শুরু করে। সকাল ৮ টায় দুইটি বিলাসবহুল বাস সকল সাংবাদিকদের নিয়ে প্রথমে মংলা ফেরিঘাট এলাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সকাল দশটার দিকে মংলা বন্দর এলাকায় পৌঁছে সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম শেষে বিলাস বহুল জাহাজে উঠে পড়ে ভ্রমণ পিপাসু সাংবাদিকবৃন্দ।
গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, মুকসুদপুর, কোটালীপাড়া ও টুংগীপাড়া থেকে আগত প্রায় শতাধিক সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্য বৃন্দ নেচে গেয়ে আনন্দমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে রওনা হয় হাড়বাড়িয়া ফরেস্ট স্পর্ট পরিদর্শনে। জাহাজে বসেই সকালের নাস্তা করার পরে জাহাজের দুইপাশ থেকে সুন্দরবনের নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করেন তারা।
হাড়বাড়িয়া পৌঁছে কর্তব্যরত ফরেস্ট অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে গানম্যান সঙ্গে নিয়ে সুন্দরবনের গহীনে ভ্রমণ করে সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পুনরায় জেটিতে ফেরত আসেন তারা।
এরপর হারবাড়িয়া থেকে করমজল এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয় জাহাজটি। জাহাজের মধ্যেই দুপুরের খাবার রান্না করা হয়। জাহাজের মধ্যে রান্না উপভোগ এর মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। রান্না শেষে সকলে দুপুরের খাবার খেয়ে জাহাজের বিভিন্ন স্থানে বসে গান গেয়ে সময় অতিবাহিত করে। এ সময় সুন্দরবনের পার ঘেঁষে কিছু হরিণ, বানর ইত্যাদি দেখে আনন্দ উপলব্ধি করে সাংবাদিক পরিবারের সদস্যগণ।
করমজল এসে নামার পরে কুমির প্রজনন কেন্দ্র, হরিণ এবং উন্মুক্ত বানরের সান্নিধ্যে এসে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে শিশু কিশোর সহ সব বয়সের পর্যটক। এখানে প্রায় দেড় ঘন্টা সময় অতিবাহিত করে সন্ধ্যার আগ দিয়ে পুনরায় মংলার উদ্দেশ্যে রওনা করে সাংবাদিকদের নিয়ে আসা জাহাজটি।
ফেরার পথে অন্ধকারের মধ্যে চাঁদের আলোতে পর্যটকদের মন আরো উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। সবাই নিচে গিয়ে বিভিন্ন ছোট ছোট ইভেন্টের মধ্য দিয়ে আনন্দঘন একটি দিন উপভোগ করে।
পুরোটা সময় জুড়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের চকলেট ও বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করে গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাব এর এন এক্স ভবনের পত্রিকা এজেন্ট খালিদ হোসেন খান, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মামুন শেখ সহ অন্যান্য সাংবাদিক বৃন্দ।
মংলা বন্দরে ফিরে সকলে যার যার মত কেনাকাটা শেষে গাড়িতে এসে ওঠে এবং প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে রওনা করে। রাত দশটার দিকে দুইটি বাস এসে থামে প্রেসক্লাব চত্বরে। এরপর সবাই সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ শেষে একে একে নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা করে। সুন্দর এবং আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত বনভোজন ২০২৪ এর সমাপ্তি হয়। সমাপনী বক্তব্যে প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জ এর সভাপতি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামীতে আরও ব্যাপক পরিসরে বনভোজনের আয়োজন করা হবে। সেখানে আরো বেশি আনন্দ উপভোগের আয়োজন থাকবে। গোপালগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়ন (জিইউজে) এর সভাপতি সৈয়দ মুরাদুল ইসলাম বলেন, আপনারা কষ্ট করে বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেছেন সেজন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা আগামীতে অন্য কোন স্থানে ব্যাপক পরিসরে বনভোজনের আয়োজন করব। তখনো আপনাদের উপস্থিতি একান্ত কাম্য।
উল্লেখ্য, প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জ প্রতিবছর বিভিন্ন স্পটে সাংবাদিকদের বিনোদন দিতে বনভোজনের আয়োজন করে থাকে। এর আগে চার দিন চার রাত সুন্দরবন টু কুয়াকাটা ভ্রমণ এবং খুলনার গিলাতলা সহ বিভিন্ন স্পটে তারা বনভোজন করেছেন।