যুগকথা রিপোর্ট:
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ৭০০ জন শিশুর কন্ঠে একসাথে ধ্বনিত হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক মার্চের ভাষণ।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকালে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন উদ্যোগে উপজেলা হেলিপ্যাড চত্বরে এই ভাষণের আয়োজন করা হয়।
৭০০ জন শিশু শিক্ষার্থীর কন্ঠে উচ্চারিত হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চের ১৯ মিনিটের ১১০৮ শব্দের কালজয়ী ঐতিহাসিক ভাষণ। আর বঙ্গবন্ধু সাজে সজ্জিত শিশুদের কণ্ঠে "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম" উচ্চারিত হওয়ার পর হেলিপ্যাড মাঠ পরিনত হয় সেই রেসকোর্স ময়দানে। আর ইতিহাস যেন ক্ষণিকের জন্য ফিরে যায় ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের সেই মাহেন্দ্রক্ষণে।
এদিন বঙ্গবন্ধুর উনিশ মিনিটের সেই ভাষণ পুরোটাই মুখস্ত করে এসেছিলেন উপজেলার ১০২ টি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানের ৭০০ জন শিক্ষার্থী। তাদের ভাষণে মুগ্ধ হন অতিথি, সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা।
পরে সেখানে "৭ই মার্চের ১৯ মিনিটের ১ হাজার ১০৮টি শব্দের ঐতিহাসিক ভাষণকে স্মরন করে ১হাজার ১০৮জন শিক্ষার্থী একসাথে জাতীয় পতাকা হাতে নাড়িয়ে এক অনন্য দৃশ্যের অবতারনা করে। এর পরপরই এইসব শিক্ষার্থীরাই প্রত্যেকে নানা রঙ্গের বেলুন আকাশে উড়িয়ে দিয়ে একটি রঙ্গিন আকাশ উপহার দেয়।
অনুষ্ঠানে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোপালগঞ্জ ৩ আসনের (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) উন্নয়ন প্রতিনিধি মোঃ শহিদুল্লাহ খন্দকার।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির প্রেরণার উৎস। স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালীদের সংকটময় মুহূর্তে একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করে স্বাধীনতার আহবান জানান বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ে উৎসারিত ১১০৮ শব্দমালার সুনিপুণ বুনন বাঙালি জাতিকে দিয়েছে স্বাধীনতা, মাতৃভূমি ও অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার বাংলাদেশ। তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশপ্রেম ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত করতে ৭ ই মার্চের ভাষণ তাদেরকে আত্মস্থ করানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোপালগঞ্জ ৩ আসনের (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) উন্নয়ন প্রতিনিধি মোঃ শহিদুল্লাহ খন্দকার বলেন, ৭১৪ জন শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধুর ১৯ মিনিটের সেই কালজয়ী ভাষণ তারা মুখস্ত বলেছেন। এরকম একটি ৭ ই মার্চ টুঙ্গিপাড়ার ইতিহাসে বিরল। এর মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আগামীতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ভাষণ শেষে ১১০৮ টি শব্দ সংবলিত প্লাকার্ড নিয়ে ও বেলুন উড়িয়ে "৭ই মার্চের শব্দ শোভাযাত্রা" নামে একটি মিছিল বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জাতির পিতার সমাধিতে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এসময় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার খায়ের, সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ, পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী মাসুদুল হক, থানার ওসি খন্দকার আমিনুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফোরকান বিশ্বাস, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ বিশ্বাস সহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।