স্টাফ রিপোর্টার: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এর মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। উক্ত ১৮ জন শিশুর মধ্যে ১২ জন শিশুকে আদালতে এনে বিচারকের কাছে জামিন আবেদন করলে বিচারক সেটি নামঞ্জুর করেছেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত শিশুদের অভিবাবকদের মধ্যে চরম আক্ষেপ এবং ক্ষোভ বিরাজ করছে। অভিভাবকগণ অভিযোগ করে বলেন, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে। তাদের সন্তানদের উপরে আইনের সঠিক ব্যবহার করা হচ্ছে না বলেও জানান তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) একসাথে সাত শিশুকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় জামিন আবেদনের শুনানি হয়, কিন্তু গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তা নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নামঞ্জুর করেছিল।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর গত ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয় এবং পরে ২১ জুলাই উক্ত ১৮ শিশুকে যশোর জেলার পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স ও ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত এক শিশুর বাবা রাসেল মুন্সী জানান, তার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ালেখা করে। পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপ এ হেলপার হিসেবে কাজ শিখছিল। ঘটনার দিন বিকালে সে কাজ করছিল এবং কাজের সময়ই পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।
আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, আমার ছেলে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। গ্রেপ্তারের দিন তার ছেলে দুপুরে মাদ্রাসা থেকে ফিরে বাড়িতেই ছিল। আসরের নামাজের পর চটপটি খেতে বাইরে গেলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। তার ছেলের জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গ্রেফতারকৃত এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা কয়েকদিন আগে গ্রেফতার হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। তিনি জানান, এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত কারও জামিন হয়নি।
সম্পাদক : শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ।
অফিস: ০২-৪৭৯৯৬১৪১, মোবাইল: ০১৯১১-৩৩২১৮৫, ইমেইল: mahbubpress66@gmail.com