বিপ্র এন এম, গোবিপ্রবি প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম অবনতি ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে স্থাপিত অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে থাকায়, একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটলেও, শনাক্ত করা যাচ্ছে না কোনো অপরাধীকে।
গতকাল (২১ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ মার্কেট এলাকায় ‘ব্যাচেলর কর্নার’ নামক একটি কম্পিউটার দোকান থেকে অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের রাবেয়া খাতুন নামক ছাত্রীর মোবাইল ফোন চুরি হয়। ঘটনাটি প্রক্টরকে জানানোর পর উক্ত ছাত্রী নিউ মার্কেট ও মেইন গেইট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চান। কিন্তু প্রক্টরের উপস্থিতিতে নিরাপত্তা দফতর থেকে জানানো হয়, ক্যাম্পাসের সব সিসিটিভি অকেজো— সচল আছে মাত্র চারটি।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এরপর আজ (২২ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও প্রক্টর দফতরে অভিযোগ করে যে, হল চত্বরে গোবিপ্রবি ইসলামিক সোসাইটি পরিচালিত “এক মাসেই কুরআন শিক্ষা” কোর্সের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ব্যানার ছেঁড়ার ঘটনা শনাক্ত করতে শিক্ষার্থীরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাইলে, নিরাপত্তা দফতর থেকে একই উত্তর দেওয়া হয়— “সব সিসিটিভি অকেজো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দফতর এ বিষয়ে আইসিটি সেলকে দোষারোপ করছে, অন্যদিকে আইসিটি সেল দায় চাপাচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের ওপর। ফলে দফায় দফায় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার কোনো সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব হচ্ছে না।
এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ক্যাম্পাস-খুলনাগামী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহনে (স্বাধীনতা বাস) কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রিন্স রায়ের ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া, ২২ জুলাই স্বাধীনতা দিবস হলের গণরুম থেকে কৃষি বিভাগের ২০২১–২২ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮–১৯ সেশনের দুই শিক্ষার্থীর ফোন চুরি হয়। কিন্তু হলে কোনো সিসিটিভি না থাকায় চোর শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এছাড়া ১৫ আগস্ট শেখ রাসেল হলের ২০০ নম্বর রুম থেকেও একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন চুরি হয়। ভুক্তভোগী মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী নাদিম হোসেন এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় জিডি করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন জানান, “নিরাপত্তা ব্যবস্থার নামে বিভিন্ন প্রকল্প নেয়া হলেও বাস্তবে কোনো সিসিটিভিই কাজ করে না। চুরি, হামলা, বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে প্রশাসনের কাছে সবসময় একই উত্তর— ‘সিসিটিভি অকেজো।’”
কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী মো আবু সায়েম জানান,"হলে CC camera নেই যেটার মাধ্যমে চোরকে শনাক্ত করা যায়। হল প্রশাসন ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ। হলে নিরাপত্তা বা থাকার মতো সুযোগ সুবিধা নেই বললেই চলে। হল প্রশাসন মুখেই শুধু বড়বড় কথা বলে, কাজের বেলায় শূন্য। ফোন চুরির ঘটনায় প্রশাসন কোনো ভাবেই তাদের দায় এড়াতে পারে না।"
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজিব কোনো বক্তব্য দিতে চান নি।
নিরাপত্তা কর্মকর্তা আরব আলীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
আইসিটি সেলের প্রধান বি.এম আরিফুল জানা,"ইউজিসি থেকে লোক আসছে যাতে উন্নত মানের সিসি ক্যামেরা লাগানো যায়। যেন ঝড়, বৃষ্টিতে তার দ্রুত নষ্ট না হয়।"
সম্পাদক : শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ।
অফিস: ০২-৪৭৯৯৬১৪১, মোবাইল: ০১৯১১-৩৩২১৮৫, ইমেইল: mahbubpress66@gmail.com